"এই শোন্, ওর সাথে যদি কথা বলিস, তাহলে তোর সাথে আড়ি। তুই হচ্ছিস আমাদের দলের, ওরা থাকে ওধারে।" মনে পড়ে স্নিগ্ধা?
সেই ছোটবেলা থেকে বন্ধুদের মাঝে বেড়া। সে বেড়া টপকে দিব্যি এদিকে, ওদিকে আসা যাওয়া। ভারী মজার। তারপর একদিন যখন প্রাইমারির গন্ডি পেরিয়ে সেকেন্ডারি তে প্রমোশন হয়, সেদিন আবার সব হাত একসাথে হয়ে কথা দেওয়া "আবার হবে তো দেখা।"
কখনো পথ চলতে কারো সাথে দেখা হয়, লাভাস্রোতের মতো আবেগের উষ্ণ প্রস্রবণ। বড় হবার সাথে সাথে মশলাদার কথাবার্তা, উপকরণ যদিও যৎসামান্য।
মাধ্যমিকের পরে অনেক চেনা মুখের আবার একসাথে একাকার হওয়া। সময় এগিয়ে চলে, কিছু কিছু চেনা মুখ, হারিয়ে যাওয়া ছন্দ ফিরে ফিরে আসে, জিয়া নস্টাল হয়, চোখের পাড়ে মিঠে কুয়াশা জমা হয়।
অনেকদিন পরে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে আবার কালো কালো মাথা গুলো ভিড় করে। বিশাল পরিবার। কিন্তু হায় রে সময়! ভিড় পাতলা হয়েছে কিছুটা।
অনুপম তো কবেই পলাতক, তখন আমরা ক্লাস ইলেভেন। তারপর পালা করে রাজা, নিয়োগী, বিউটি আর সবশেষে ইলা। গতবার আমার জন্মদিনে সুপর্ণা বললো ওর প্রেসার নাকি অনেকটাই বেশি থাকে। আরো বেশি হলে নাকি ভোকাট্টা। টুম্পা, ওপাশে যাওয়ার তাড়া আছে নাকি?
শবরীকে ফোন না করলে ও আমার সাথে কাট্টি করবে বলে। ধেৎ, বন্ধুত্বে আবার ভাবের অভাব হয় নাকি?
WA তে একরাশ প্ল্যান, কবে কোথায় আবার হবে দেখা। অনাবিল আনন্দের, অনর্গল বকবক আর রামধনু উচ্ছাসের এক অদ্ভুত ককটেল। নেশা হয়, বেশ লাগে। আনন্দ ঘন হয়, ভাবতে ভালো লাগে আছি কাছাকাছি, পাশাপাশি।
" জায়গা রাখা আছে।" সেই ছোটবেলায় ছোট্ট ক্লাসরুমের কুঠুরি থেকে বাস, ট্রাম, ট্রেনে - জায়গা রাখাই থাকা বন্ধুদের জন্যে। তারপর একদিন হাত ছাড়িয়ে যেতে যেতে বলে যাওয়া, "অপেক্ষা করবো তারাদের দেশে, সেখানেও জায়গা রাখা আছে।"
ভীষণ মনখারাপের দিনে হাতের পরশ রইবে হাতে। দুফোঁটা আবেগ যেন পদ্মপত্রে নীড়। অথবা ফোন করে বলা, থাকনা ছুঁয়ে একটু আমায় আজ, হোক না আজ তিস্তা খরস্রোতা।
ভালো থাকিস সবাই.......